ফস্কে যাওয়া মাছটি সর্বদাই সবচে বড়ো হয়ে থাকে



রাত এগারোটা বাজে। কাজিনের বিয়ের ভোজন শেষে জিনজিয়ানের গ্রাউন্ড ফ্লোরের লাউঞ্জে বসে আছি। সাথে দুই ছেলে। ওদের মা মিনিট বিশেক ধরে ফোনে নামছি নামছি করছে। বুঝলাম মেয়েদের ফটোসেশন শেষ হয়নি এখনও। আরও কতক্ষন চলবে কে জানে। ছেলে দুটো লাউঞ্জের বিশাল এক্যুরিয়ামটার সামনে খেলা করছে। আমি সোফায় আরো আয়েস করে এলিয়ে পড়লাম। 

গ্রাউন্ড ফ্লোরের চাইনিজ সেকশন ক্লোস হয়ে গেছে। স্টাফরা সব টেবিল চেয়ার গোছগাছ করে ওয়েট করছে কখন উপরের লিংগারিং গেষ্ট গুলি বিদায় ন্যায়। নীচের বেশিরভাগ লাইটই নিভিয়ে দেয়া হয়েছে। এক্যুরিয়ামটার হলুদ আলোতে বাঁচ্চা দুটোর খেলা দেখতে ভালোই লাগছে। এক্যুরিয়ামের মধ্যেও একগাদা মাছ ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে।দেখতে দেখতে চোখ দুটো কেমন বুঁজে আসছিলো। বড় ছেলেটা হটাৎ পাশে এসে ধপাস করে বসে পড়লো। আমার মতোই এক্যুরিয়ামটার দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন। তারপর আমাকে বললো "বাবা , ছোট বেলায় তোমার এক্যুরিয়াম ছিলো?" উত্তরে বললাম "না বাবা। আমার এক্যুরিয়াম ছিলোনা। তবে ছোটো বেলায় বর্ষা কালে আমরা সব বন্ধুরা দোলবেঁধে খালে বিলে চলে যেতাম। সেখানে গিয়ে আমরা মাছ ধরতাম।" "বড়শি দিয়ে ?" ও জিজ্ঞেস করলো। বললাম "না, গামছা বা পলিথিন ব্যাগ দিয়ে। তারপর সেইসব জ্যান্ত মাছগুলি বাসায় নিয়ে এসে - খালি হরলিক্সের বোয়মে পানি ভরে - ছেড়ে দিতাম। ওটাই আমাদের এক্যুরিয়াম ছিলো।" শুনে ও আমার মতোই সোফায় এলিয়ে পরে বিশাল এক্যুরিয়ামটার দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন। তারপর বেশ হতাশ গলায় বললো - " নাহ। তোমাদের সময়টাই বেশি বেশি মজার ছিলো।" আমি কিছুক্ষন চুপ করে ভাবতে লাগলাম কি বলে ওকে চিয়ার আপ করা যায়। তারপর আরো কিছুক্ষন পর গলা খাঁকড়ানি দিয়ে বললাম - "হ্যা বাবা। আমাদের সময়টাই বেশী মজার ছিলো।"

Comments

Popular Posts