শেষের খেলা
- তুই কি এই আলাপও পোস্ট করে দিবি নাকি?
- অবশ্যই। তবে আগেই বলে রাখি ব্যাপারটা কিন্তু একটু জটিল। তারপরেও যদি শুনতে চাস তাহলে বলবো।
- জটিলের থেকে আমার কাছে বেশী আজগুবিই বলে মনে হচ্ছে। তুই নিজেই বলছিস ওগুলি অথেন্টিক না। আল্লাহ রসূল কখনো এসব কিছু বলেনি। অথচ একই সাথে আবার বলছিস তুই এসব সত্যি হিসেবে বিস্বাস করিস! এইসব ঢঙের মানি কি?
- না না, ওই পার্টটা একদম সোজাসাপ্টা। কোরানে আল্লাহ রাসূলকে বলেছেন বলে দাও তুমি গায়েবের খবর জানো না। ফুল স্টপ। এমন কি মেক সিওর করার জন্যে উদাহর দিয়ে বুঝিয়ে দিতে বলেছেন যে বলো - আমি যদি গায়েবের খবর জানতামই তাহলে তো আমি আগে আমার নিজের আঁখেরই গুছিয়ে নিতে পারতাম! সো এর পর আর কোনো কথা থাকতে পারে না। আর আল্লাহ এই কথা বলতে বলার পরও তার রাসূল মনের সুখে ঢুঁস ঠাস ভবিষ্যৎ বাণী করে গেছেন, এইটা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের কাছে মোটেও বিস্বাস যোগ্য হতে পারেনা।
- কোরানে কোথায় বলা আছে এই কথা?
- নিজে খুঁজে দ্যাখ। সব চামুচ দিয়ে মুখে তুলে খাইয়ে দিলে গায়ে লাগে না। খেটে খা, স্বাস্থ ভালোথাকবে।
- শোন কোরান বোঝা এত সহজ না। ওটা অনেক উচ্চ সাহিত্য। খালি আরবি জানলেই হবে না।
- সেটা তোর ধারণা। কোরান মোটেও সে কথা বলেন না। বরং উল্টোটা বলে, আল্লাহ কোরান কে সহজ করে দিয়েছেন বোঝার জন্যে। বুঝতে না পারাটা তোর ব্যর্থতা। শুধু শুধু কোরান কে অক্ষম প্রমান করার চেষ্টা করিস না।
- আরে সেটাতো ওই জামানার মানুষদের জন্য। ওরা হয়তো সরাসরি বুঝতো।
- সেইটা তোর ধারণা। এগেইন কোরান সে কথা বলে না। যাহোক তুই কথা ঘুরাইস না। এই বিষয়ে কথা বলতে গেলেই মানুষ হুদাই এক ডাল থেকে আরেক ডালে লাফায়। কোরান সহজে বোঝা যায় নাকি তার জন্যে লম্বা দাড়ি তুপি লাগে সেটা অন্য আলাপ। রাসূলের ওই ভবিষ্যত না জানার ব্যাপারে আল্লাহ যা বলেছে তাতে না বোঝার কি আছে বল?
- শোন, শুধু কোরান ছাড়াও নবীজির কাছে যে আল্লাহর ওহী আসতো তা জানিস? আল্লাহ ওই সব ওহীর মাধ্যমে নবীজিকে অনেক কিছু বলেছেন। এমন ও তো হতে পারে আল্লাহ ঐসব ওহীতে দাজ্জাল, ইমাম মেহেদী আর ঈসার আবার আসার কথা জানিয়েছে।
- তুই হতে পারের মধ্যে থাকতে চাইলে থাক। কেও তোকে বাধা দিচ্ছে না। আমি শুধু বলছি কোরানে আল্লাহ যখন বলেছেন নো ওয়ে, তো ওই টুকুই আমাদের জন্যে যথেষ্ট। এরপর সব বড় বড় আলেম তো দূরে থাক স্বয়ং জিব্রাঈল এসে বললেও আমার বিস্বাস করার কোনো বাধ্য বাধকতা নাই।
- ঠিক আছে, ধর তর্কের খাতিরে মানলাম। তাহলে তুই বলতে চাচ্ছিস যে, শেষ জামানায় দাজ্জালের আবির্ভাব হবে, ইমাম মেহেদী দাজ্জালের সাথে ফাইট করতে যাবে আর ঈসা নবী এসে দাজ্জালকে খতম করবে এইসব সবই বানানো কথা। কার ঠেকা পরসে বল ওইসব বানানোর? আর বানিয়ে লাভটা কি!
- এইতো জটিল পার্ট এ এসেছিস এবার। মোটিভটা কি সেটাই তো প্রশ্ন?
- এইবার তোর প্যাচানো শুরু হবে তাইতো?
- নাহ বেশি প্যাচাবো না। আমি শুধু লম্বা দাঁড়ি তুপি ছাড়াই স্যাম গারেট নামের এক ভদ্রলোক এ বিষয়ে একটা বেশ ইন্টারেষ্টিং পয়েন্ট মেক করেছে সেটাই বলবো।
- বলে যা।
- শোন, আমরা ছোট বেলা থেকেই যেমনটা শিখেছি, ইবলিশের মেইন উদ্দেশ্য বেশির ভাগ মানুষকে সে দোজোগে নিয়ে যাবে ব্যাপারটা কিন্তু ঠিক তা না। আল্লাহর সাথে তার খোলা চেলেঞ্জ হলো সে প্রমান করে দেখাবে বেশীর ভাগ মানুষই আসলে বেঈমান। হ্যা, বাই প্রোডাক্ট হিসেবে বেঈমানরা দোযোগে যাবে তা ঠিক। তুই সুক্ষ পার্থক্যটা কি ধরতে পেরেছিস?
- আমি খুব একটা পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি না।
- পার্থক্য হলো রেস্পন্সিবিলিটি তে। ইবলিশ মানুষকে দোজগে নিয়ে যেতে চায়। আর এর জন্যে সে যা দরকার তাই করবে। শুধু এতটুকু বললে দোষটা অনেক খানিই শয়তানের ঘাড়ে চলে যায়। আর মানুষ যেন সুবোদ বালক। ভাঁজা মাছটা উল্টে খাবে কি, মাছের দিকে তাকাতেই লজ্জা লাগে।
- তো আদমকে কি ইবলিস ভুলিয়ে ভালিয়ে গন্ধম ফল খাওয়ায় নাই?
- হ্যা আর তারজন্যে কিন্তু ধমকটা আল্লাহ আদমকেই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন আমি আদমকে আমার উপর সুদৃড় পাইনি। শয়তান কে জিজ্ঞেস করেননি তুই কোনো ওকে খাইয়েছিস।
- তো এসবের সাথে দাজ্জালের সম্পর্ক কি?
- দাজ্জাল হলো ইবলিসের আলটিমেট টুল টু প্রুভ বেশীর ভাগ মানুষই আসলে বেঈমান। যে, সুযোক পেলেই বেশীর ভাগ মানুষই চোখ বন্ধ করে আল্লাহর সাথে জেনে শুনেই বেঈমানি করবে। এই জেনে শুনে পার্টটা ইবলিসের জন্যে খুবই জরুরি। কারণ মানুষ যেন পরে বলতে না পারে আমি জানতাম না।
- আর তুই বলতে চাচ্ছিস এ জন্যই ইবলিস তার দাজ্জালের প্লানটা মানুষকে আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছে?
- এই তো জায়গা মতোই পৌঁছে গেছিস।
- আর এই জন্যেই তুই ঐসব হাদিসগুলো সত্যি হিসেবে বিশ্বাস করিস? ইভেন যদি শয়তানের মতো মিথ্যাবাদীর কাছে থেকে আসে তাহলেও?
- তুই যদি শয়তানের মতো মিথ্যাবাদীর কাছ থেকে জানা গেছে শুনেও রোজ রাতে প্রটেকশনের আসায় ঘুমোতে যাবার আগে আয়াতুল কুরসী পরে ঘুমোতে যেতে পারিস তাহলে কেন না?
- কিন্তু ওটাতো নবীজি কন্ফার্ম করেছেন যে শয়তান এই একটা বিষয়ে সত্য কথা বলেছেন।
- আবার আরেক ডালে লাফ দিচ্ছিস। নবীজি কি কন্ফার্ম করেছেন না করেছেন সেটা কন্ফার্ম করার ক্ষমতা কে রাখে কে রাখে না ওই আলাপে এখন ঢুকতে চাচ্ছি না।
- সো শয়তান মাঝে মধ্যে তার শয়তানির কথা মানুষকে জানিয়ে রাখে পরে যেন সে বলতে না পারে আমি জানতাম না।
- হ্যা, গানে, কবিতায়, সিনেমা নাটকে, চোদ্দশো বছরের পুরোনো গল্প গুজবে।
- অথবা তোর মতো ছাগলের মাধ্যমে।
- হতে পারে। তবে এখন যখন জেনেছিস। পরে কিন্তু আবার বলিসনে আমি জানতাম না।



Comments
Post a Comment